অনলাইনে নিজে নিজে নতুন ভোটার হওয়ার ফরম পূরণ করবেন যেভাবে

বয়স ১৬ পেরিয়েছে কিন্তু এখনও ভোটার হননি। তাহলে আর দেরি না করে ভোটার হয়ে যান। এখন অনলাইনে খুব সহজেই ভোটার ফরম পূরণ করে নিজে নিজে ভোটার হতে পারবেন। মাত্র ১৬ বছর বয়স হলেই আপনি ভোটার হওয়ার ফরম পূরণ করতে পারবেন। এর পর যা যা করণীয় আমরা নিচের পোস্ট আলোচনা করব। 


ভোটার/জাতীয় পরিচয় করার জন্য যা যা প্রয়োজন:

জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ভোটার হওয়ার জন্য মূলত তেমন কিছুই প্রয়োজন নেই বল্লে হয় না। জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ভোটার হওয়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদিও প্রয়োজন। ধরুন আপনার বয়স ১৬ বছর হয়েছে বা পেরিয়েছে। তাহলে আপনার ভোটার হওয়া প্রয়োজন। ভোটার হতে হলে আপনার প্রথমত প্রয়োজন হবে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ, পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র, রক্তের গ্রুপ, ট্যাক্স প্রদান এর রশিদ। আপনার জিজ্ঞাসা আসতে পারে আমি ট্যাক্স এর রশিদ কোথায় পাব অথবা অনেকেরই পিতা বা মাতা অথবা উভয়ই মৃত্যুবরণ করেছেন। তাহলে তাদের ক্ষেত্রে কি হবে। হ্যা তাদের ক্ষেত্রে যার ট্যাক্স এর রশিদ এর কথা বলা হয়েছে অথাৎ আপনার  পিতার স্থায়ী ঠিকানা এর বিপরীতে প্রদেয় ট্যাক্স প্রদানের রশিদ, পিতা ও মাতা এর যে কেউ অথবা উভয় মৃত হলে মৃত্যু সনদ, সাল এরকম। আলাদা ভাবে আপনি যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিপূর্ণটা যোগ করতে চান তাহলে আপনার সেই শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদের একটি কপি। 


ভোটার আবেদন ফরম পূরণ করতে কি কি যোগ্যতা থাকা আবশ্যক: 

  • প্রথমত বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। 
  • বয়স ১৬ বৎসর এর অধিক।
  • পূর্বে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন করেননি। 

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে?

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য মূলত অনলাইন ফরম পূরণ পূর্বক উক্ত কপি প্রিন্ট আউট নেওয়ার পর নিম্নে উল্লেখিত কাগজপত্রাদি সংযুক্ত করে স্থানীয় নির্বাচনী অফিসে জমা করতে হবে। 
  • অনলাইন ফরম পূরণ এর প্রিন্ট আউট কপি।
  • জিডিটাল জন্ম নিবন্ধন এর কপি। 
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমাণের জন্য জেএসসি অথবা এসএসসি এর সনদ পত্রের কপি। 
  • পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স / টিন সার্টিফিকেট এর কপি (যদি সংযুক্ত করা থাকে)। 
  • পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। 
  • পিতা ও মাতা উভয় অথবা কেহ মৃত হলে তার প্রমাণক হিসেবে মৃত্যু সনদ এর কপি। 
  • ইউনিয়ন পরিষদ অথবা পৌর প্রশাসক কর্তৃক প্রদেয় নাগরিকত্ব সনদ ও হোল্ডিং ট্যাক্স এর নম্বরযুক্ত কপি। 

নতুন ভোটার অইডি কার্ড এর ফরম পূরণ:

প্রথমে আপনাকে ভোটার আইডির জন্য নির্বাচন কমিশন এর অফিসিয়াল ওয়েব পোর্টল https://services.nidw.gov.bd/এ গিয়ে নতুন নিবন্ধন নামক ট্যাব এ ক্লিক করতে হবে। এরপর সেখানে আপনার নিজ নাম এবং একটি সচল মোবাইল নম্বর দিয়ে সাবমিট করতে হবে। এরপর আপনার মোবাইল ফোন এ একটি ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করা হবে ভেরিফিকেশন এর জন্য। আপনি আপনার মোবাইল এ ক্ষুদে বার্তা পেলে উক্ত কোডটি বসিয়ে সাবমিট করবেন। এরপর আপনার সামনে নতুন একটি স্কিন প্রদর্শিত হবে। উক্ত স্কিন এ আপনি চাইলে ভবিষ্যতে সুবিধাজনক ভাবে ব্যবহার করার জন্য আপনার প্রোফাইল এর একটি ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড বসাতে পারবেন। আপনি চাইলে বসাতে পারেন আবার না চাইলেও নাও বসাতে পারেন। এরপর আপনি সামনে অগ্রসর হন। 

এবার প্রোফাইল ট্যাব এ ক্লিক করুন তারপর আপনার নিজের নাম, পিতা নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ, জন্ম নিবন্ধন নম্বর, রক্তের গ্রুপ প্রভূূতি যথাযথ ভাবে পূরণ করে সাবমিট করুন। এরপর আপনার ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ শেষ হবে। 

এবার আপনার অন্যান্য তথ্যের ঘরে ক্লিক করুন। সেখানেও একটি ফরম প্রদর্শন করা হবে। উক্ত ফরম ভালোভাবে পূরণ করুন। আপনার যা আছে তাই দিন। অযথা কোন তথ্য ইনপুট দিয়ে ঝামেলা না করাই ভালো। 

এবার আপনি ঠিকানা নামক ট্যাব এ প্রবেশ করুন। উক্ত ট্যাব এ বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা নামক দুইটি আলাদা পার্ট আছে। এখানে আপনি আপনার ঠিকানা যথাযথ ভাবে পূরণ করুন এবং আপনি বর্তমান বা স্থায়ী যে কোন একটি ঠিকানায় ভোটার হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে টিক মার্ক করুন। 

এবার সম্পূর্ণ ফরমটি পূরণ শেষ  হলে এবার আপনি সাবমিট বাটনে চাপ দিন। তাহলে আপনার ফরমটি সফল ভাবে সাবমিট হয়েছে দেখা যাবে। এবার আপনি ডাউনলোড নামক অপশন  থেকে আপনার পূরণকৃত ফরমটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন। 

ফরমটি প্রিন্ট নেওয়া হলে আপনাকে আরো কিছু তথ্য পূরণ করতে হবে। উক্ত ফরম এর সনাক্তকারীর ঘরে আপনার পরিবারের কোন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বসাতে হবে কলমে। অথাৎ আপনার পরিবারের কেউ অথবা আপনার নিকটস্থ কোন ব্যক্তি আপনাকে শনাক্ত করবেন মর্মে উক্ত ঘরে তার নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরটি বসিয়ে নির্ধারিত স্থানে স্বাক্ষর করবেন। 

শনাক্তকারী আপনার শনাক্ত করার পর এবার আপনার উক্ত তথ্যগুলো সঠিক আছে কিনা মর্মে যাচাই করতে হবে। একজন ইউপি সদস্য, পৌর কাউন্সিলর অথবা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান / পৌর প্রশাসক যাচাইকারীর ঘরে তার জাতীয় পরিচয়পত্র ইনপুট দিয়ে নির্ধারিত স্থানে স্বাক্ষর করবেন। ব্যাস আপনার কাজ শেষ। 

এবার আপনার কাজ উক্ত ফরম এর সহিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অথাৎ আপনার জন্ম নিবন্ধন এর কপি, শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণক, পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের রিপোর্ট ও হোল্ডিং ট্যাক্স এর কাগজ সহ নির্বাচন অফিস এ জমাদান করা। 

ভোটার আইডি করার পূর্বে ভেরিফিকেশন:

আপনার জমাকৃত কাগজপত্রাদি সঠিক আছে কি না তা নির্বাচনি অফিস থেকে ভেরিফিকেশন করার পর আপনার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একটি ক্ষুদে বার্তা প্রদান করবেন। এবং উক্ত বার্তায় আপনার নিজের ছবি এবং হাতের ফিঙ্গার নেওয়ার তারিখ জানানো হবে। উক্ত বার্তা পেলে আপনি নির্ধারিত তারিখে যথাযথ স্থানে উপস্থিত হয়ে নিজের ছবি এবং ফিঙ্গার দিয়ে আসবেন। কাজ শেষ। 

জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করবেন কিভাবে: 

উপরোক্ত সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হলে আপনি ফিঙ্গার দেওয়ার ও ছবি ওঠার প্রায় ৪ থেকে ৫ দিন পরই অনলাইন েথেকে আপনার নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। উক্ত কার্ডটি ডাউনলোড করতে আপনাকে পুনরায় নির্বাচন কমিশন এর অফিসিয়াল ওয়েব পোর্টাল এ প্রবেশ করতে হবে। এরপর আপনার পূর্বে ব্যবহৃত ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করে ডাউনলোড ট্যাব থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। 

এভাবেই আপনি একটি নতুন ভোটার ফরম পূরণ করতে পারবেন এবং নিজে নিজে বাড়িতে বসে ভোটার হতে পারবেন। এই বিষয়ে আপনার আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
Tags

Post a Comment

0 Comments

Top Post Ad

Bottom Post Ad