ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড (Loading Speed) বৃদ্ধির উপায়

একটি ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড স্লো হলে সেই সাইট বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হয়। বিশেষ করে ট্রাফিক বাভিজিটর হারায়। বিভিন্ন করণে একটি ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড স্লো হয়ে থাকে। একটি ওয়েবসাইট এর স্পিড কেন স্লো হয় এবং সেটাকে কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় অথাৎ স্ট্যান্ডার্ড মান এ নিয়ে আসা যায় চলুন এবার জেনে নেই। 

কোন ওয়েব সাইটএর স্ট্যান্ডার্ড লোডিং স্পিড বা লোডিং টাইম সাধারণত ৩ সেকেন্ড ধরা হয়। সারাবিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল এর মতে কোন ওয়েবসাইট ৩ সেকেন্ড এ পুরোপুরি লোডিং না নেয় বা হয় তাহলে সেই ওয়েবসাইট তার কাঙ্খিত ভিজিটর হারাবে। অথাৎ ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড স্লো হলে প্রতি ৬ জনে ২ জন ভিজিটর হারাবে। ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড স্লো হলে ভিজিটর সাধারণ ওই সাইট ভিজি করা থেকে বিরত থাকেন। এছাড়াও সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন অথাৎ SEO এর ক্ষেত্রেও লোডিং স্পিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সার্চ রেজাল্টে প্রথম সারিতে থাকতে ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড ফাস্টা বা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। 


ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড টেস্ট করার কয়েকটি টুলস

Gtmetrix হলো ওবেসাইট এর লোডিং স্পিড চেক করার একটি জনপ্রিয় সাইট। এই সাইট এর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড চেক করতে পারবেন। পাশাপাশি আপনাকে আরো বিস্তারিত ভাবে ওয়েবপেজের পারফরমেন্স গ্রেড, পেজ সাইট সহ খুটিনাটি সস্যা জানাবে। সেগুলো সঠিক ভাবে পরবর্তীতে সেপআপ/সমাধান করতে পারবেন। 

Pingdom ওয়েসাইট এর লোডিং স্পিড চেক করার আরেকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট বা টুলস। এর মাধ্যমেও আপনি আপনার ওয়েব সাইট এর লোডিং স্পিড চেক করতে পারবেন। পাশাপাশি Gtmetrix এর মতো লোডিং স্পিড চেক করার পাশাপাশি পেজ স্পিড ও খুটিনাটি সমস্যা সমূহ দেখতে পারবেন। 

Page Speed Insights হলো গুগলের পেজ স্পিড চেকিং টুলস। এটির মাধ্যমেও আপনি ওয়েব সাইট এর পেজ স্পিড, মোবাইল ফেন্ডলি কি না তা চেক করতে পারবেন। এছাড়াও ওয়েবসাইট এ ব্যবহৃত ইমেজ অপটিমাইজেশন কি না সেটাও জানতে পারবেন। কোডিং সমস্যা থাকলেও সেটাও জানতে পারবেন। 

কি কারণে ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড স্লো হয়:

  • প্রথমত নিম্নমানের হোস্টিং ব্যবহার করা
  • ওয়েবসাইট সঠিক ভাবে কনফিগার না করা 
  • ইমেজ অপটিমাইজ না করা 
  • ভিডিও এমব্লেডেড করা
  • ওয়ার্ডপ্রেস এর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহার করা

ওয়েব সাইট এর লোডিং স্পিড বাড়ানোর উপায় সমূহ: 

বিভিন্ন কারণে ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড স্লো হয়ে থাকে। তার মধ্যে উপরোক্ত কারণগুলোর জন্যই বেশিরভাগ সময় ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড স্লো হয়ে থাকে। নিম্নে ওয়েব সাইট এর লোডিং স্পিড বাড়ানোর উপায় সমূহ আলোচনা করা হলো। 

নিম্ন মানের হোস্টিং ব্যবহার না করা: 

কোন ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড স্লো হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো নিম্নমানের হোস্টিং প্যাক ব্যবহার করা। বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় যারা নতুন ভাবে সাইট বানানো শুরু করেছেন তাদের মধ্যে এই অভ্যাস দেখা যায় যে, প্রথম দিকে খরচ বাচানোর জন্য কম টাকায় অখ্যাত হোস্টিং কোম্পানী থেকে নিম্নমানের হোস্টিং প্যাক কিনে তা ব্যবহার করেন। যার ফলে এর লোডিং স্পিড স্লো হয়। কিছু কিছু হোস্টিং প্রভাইডার কোম্পানী দেখা যায় ওভারলোডেড সার্ভারগুলো থেকে শেয়ার হোস্টিং কিনে তাদের নিজেদের ক্লায়েন্টদের েকাছে সেল করে। যার ফলে সাইট ধীরে ধীরে স্লো হয়ে যায়। তাই ওয়েবসাইট তৈরির শুরুতেই কোন ভালো হোস্টিং প্রোভাইডার কোম্পানীর কাছ থেকে হোস্টিং নিয়ে শুরু করা উচিত। 

ওয়েবসাইট সঠিক ভাবে কনফিগার করা: 

সাধারণত ওয়ার্ডপ্রেস  এর মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের প্লাগিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই প্লাগিনগুলো মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাগিন হলো ক্যাশ প্লাগিন। এই ক্যাশ প্লাগিন এর কাজ হলো একজন ভিজিটর যখন একটি ওয়েবসাইট ভিজিট করে তখন এই প্লাগিন সেই সাইটের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিছু ডাটা ভিজিটরের ওয়েব ব্রাউজারে অটোমেটিক সেভ করে রাখে। যার ফলে পরবর্তীতে ভিজিটর যখন আবার ওই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে আসেন তখন তার ব্রাউজারে আগে থেকেই ওই সাইটটির অনেক ডাটা সেভ থাকার কারণে ওবেসাইট লোড নিতে খুবই কম সময় নেয়। আপনি যদি আপনার ওেয়েবসাইট এ ইতোপূর্বে কোন ক্যাশ প্লাগিন ব্যবহার করে না থাকেন তাহলো একটি ক্যাশ প্লাগিন ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ক্যাশ প্লাগিনগুলোর মধ্যে  WP Rocket, WP Super Cash, WP Fastest Cash জনপ্রিয় ক্যাশ প্লাগিন। 

ইমেজ অপটিমাইজ করা: 

কোন ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড স্লো হওয়ার পিছনে সিঠিক ভাবে ইমেজ অপটিমাইজ না করাও অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে থাকে। ওয়েব সাইড বড় হওয়ার ফলে সাধারণত পেইজ লোড নিতে বেশি সময় লেগে যায়। যার দরুণ সকল পোস্টে ব্যবহৃত ইমেজগুলো অপটিমাইজ করাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
বড় িসাইজ অথাৎ বেশি কিলোবাইট/মেগাবাইট এর ইমেজ ব্যবহার করার জন্য ওয়েবসাইট এর স্পিড স্লো হয়ে থাকে। ওয়েবসাইটের সকল প্রকার ছবির ফরম্যাট হলো JPEG ফরম্যাট। কিন্তু অনেকেই আবার PNG ফরম্যাটের ছবি ব্যবহার করে থাকেন। যার ফলে ওয়েবসাইটের পুরো পেজটি লোড নিতে সাধারণত নরমাল সময়ের থেকে একটু বেশি সময় প্রয়োজন নেয়। তাই ওয়েবসাইট এ ব্যবহৃত সকল প্রকার ইমেজ সংযুক্ত করার আগে ইমেজ টি ভালো ভাবে অপটিমাইজ করে JPEG ফরম্যাটে আছে কি না সেটা দেখে নিতে হবে। এখন ইমেজ এর ফাইল সাইজ নিয়ে কথা থাকতে পারে। ইমেজ এর ফাইল সাইজ স্ট্যান্ডার্ড সাইজ কত হওয়া উচিত ? সাধারণত অপটিমাইজ করা ইমেজ এর সাইজ 100KB এর মধ্যে রাখাই ভালো। তবে ইমেজ সাইজ কমানোর জন্য ইমেজ এর ্স্ট্যান্ডার্ড মান নষ্ট করা যাবে না সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত। 

ওয়েবসাইট এ ভিডিও এমবেড করা:

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেকে তার সাইটের পোস্টে ভিড়িও থাকলে সেই ভিডিও আপলোড করে পোস্ট করে থাকেন। এর জন্যই সাইট স্লো হয়ে থাকে। পোস্টে ভিডিও থাকলে সেটা YOUTUBE বা অন্য কোথাও আপলোড করে সেই লিংকটি এমবেড করে পোস্ট করলে লোডিং স্পিড ফাস্ট হবে। অন্য দিকে কিছুটা জায়গাও বাচবে। 

ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহার না করা: 

বর্তমান বিশ্বে দিন দিন ওয়ার্ডপ্রেস এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। বিশেষ করে যারা কোডিং জানেন না তারা চোখ বুঝে ওয়োর্ডপ্রেস এ চলে যান। এই ওয়ার্ডপ্রেস এ অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহার করাও কিন্তু সাইট লোডিং স্পিড স্লো হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে। হর হামেসাই দেখা যায় অনেকেই প্রয়োজন নেই অথচ কিছু প্লাগিন ইন্সস্টল করে রেখেছেন। না একদমই না। এই অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত প্লাগিন গুলো সাইটের লোডিং স্পিড কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। তাই ওয়েব সাইট এর লোডিং স্পিড ফাস্ট করোর  ক্ষেত্রে প্রয়োজননের অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহার না করাই ভালো। 

কোডিং সমস্যা : 

কোডিং সমস্যা লোডিং স্পিড স্লো হওয়ার অন্যতম আরেকটি কারণ। আমরা অনেকেই ফ্রি থিম ডাউনলোড করে ব্যবহার করে থাকি। অথচ আমরা জানিই না যে ওই থিমের কোডিং এ বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। যার জন্য সাইট স্লো লোডিং এ কাজ করে। 

শেষ কথা: 

কোন ওয়েবসাইট র‌্যাংকিং এ প্রথম সারিতে থাকতে ফাস্ট লোডিং স্পিড বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। সাধারণ উপরে আলোচিত বিষয়গুলোর দিকে নজর দিয়ে কোন ওয়েবসাইট এর মানসম্মত বা স্ট্যান্ডার্ড মানের লোডিং স্পিড বাড়ানো উচিত। 
Tags

Post a Comment

0 Comments

Top Post Ad

Bottom Post Ad